নড়াইলে ইয়াছিন মোল্যা (২২) নামে এক রাজমিস্ত্রীকে হত্যার দায়ে হাসিব খান (২১) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত হাসিব খান সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মফিজ খানের ছেলে।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যা. এস এম আব্দুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ৯ টার দিকে সুলতান মেলা দেখার কথা বলে বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন ইয়াসিন। পরে ঘরে ফিরে না এলে আশপাশের লোকজন ও নিকট আত্মীয় স্বজনসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন তার পরিবার। খোঁজাখুঁজি করে কোথাও পাওয়া না গেলে ইয়াছিনের বোন ওই দিন রাতে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এর ছয় দিন পর ২২ জানুয়ারি বেলা দুপুরে দিকে পুলিশ ফোন করে জানায়, আলোকদিয়া ঈদগাহ গামী ইটের রাস্তার পাশে নুরুজ্জামান মোল্যার জমির দক্ষিণে রাস্তার পাশে ইয়াছিনের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে পুলিশ ইয়াছিন মোল্যা এর মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে তার লাশ ময়না তদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়। পুলিশ এ হত্যার ঘটনার তদন্তকালে প্রাথমিকভাবে মো. হোসাইন মোল্যা ও হাসিব খাঁনকে গ্রেপ্তার করেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, ইয়াছিনকে মেলা দেখার কথা বলে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে মধ্যরাতে আলোকদিয়া গ্রামে পৌছে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহান। এক পর্যায়ে মো. হোসাইন মোল্যা ও হাসিব খান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার কপালে, মাথার পিছনে মারপিট করে জখম করে। পরে চাকু দিয়ে ইয়াছিনের গলার ডানপাশে শ্বাসনালির উপর আঘাত করে তাকে হত্যা করে। হত্যা পরবর্তী সময়ে লাশ গোপন করার জন্য নুরুজ্জামানের জমির দক্ষিণ দিকে রাস্তার পাশে খেজুর গাছের শুকনা পাতা দিয়ে ঢেকে রাখে এবং মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনার পরেরদিন ২৩ জানুয়ারি ইয়াছিনের বাবা বাদি হয়ে ৭ জনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায়ের ধার্য দিনে আদালত হাসিব খানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে জেল-জরিমানা করেন। এছাড়া বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস প্রদান করেন আদালত।
খুলনা গেজেট/জেএম